স্বদেশ ডেস্ক: বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ভারতকে ছাড়াই চলতি সপ্তাহে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চীন ও ১৪টি দেশ অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে (রিজিওনাল কম্প্রিহেনশন ইকোনমিক পার্টনারশিপ-আরসিইপি) সম্মত হতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চুক্তিতে সম্মত হলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক চুক্তি হবে এটি। চুক্তি পরিকল্পনা থেকে শেষ মুহূর্তে ভারত সরে না এলে মোট ১৬টি দেশের মধ্যে এই চুক্তি হতো।
২০২০ সাল নাগাদ এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এমনটা আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তি হলে আসিয়ানভুক্ত ১০ দেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে অবাধে বাণিজ্য হবে। চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু এই চুক্তির আওতাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পণ্য বাণিজ্যে অল্প শুল্ক রাখা হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আগে যেখানে এই দেশগুলোর মধ্যে কোনো পণ্য এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাঠাতে ভিন্ন ভিন্ন শুল্ক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হতো, সেখানে এখন একই শুল্কে ১৫টি দেশের মধ্যে পণ্য পাঠানো যাবে। দেশের স্বার্থে কোনো আপস করা হবে না বলে চুক্তিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিল্লির দাবি, এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সস্তা দামের চীনা পণ্যে সয়লাব হয়ে যাবে ভারতের বাজার। মোদি বলেছেন, ‘সব ভারতীয় নাগরিকের পক্ষে যখন আমি এই চুক্তির মূল্যায়ন করি, আমি কোনো ইতিবাচক উত্তর পাইনি। না গান্ধীজির আদর্শ না আমার নিজের বিবেক! কেউই চুক্তির পক্ষে মত দেয়নি। ফলে জাতীয় স্বার্থে কোনো আপস নয়।’ আগামী বছরের শুরুতে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলেও তা কার্যকরে কয়েক বছর লেগে যাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই চুক্তির মধ্যে যে জটিলতা রয়েছে তা নিরসন না করা হলে বৃহৎ এই চুক্তি আলোর মুখ নাও দেখতে পারে। কারণ এই ১৫টি দেশে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের অবস্থান। বিশ্বের মোট উৎপাদিত গৃহস্থালি পণ্যের এক-তৃতীয়াংশ এই দেশগুলোর মানুষ ব্যবহার করে। এ ক্ষেত্রে ভারতের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশকে বাইরে রেখে এমন চুক্তিটা কতটা ফলদায়ক হবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে ইন্দোনেশিয়া ও জাপানের লবিংয়ে ভারত এ চুক্তিতে পরবর্তী সময়ে যুক্ত হতেও পারেÑএমন সম্ভাবনা দেখছে।